বাঘায় ঈদের কেনা কাটায় বাজার কাপাচ্ছে ইন্ডিয়ান-পাকিস্থানী পোষাক

রাজশাহী লীড

আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী): ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে বাড়ছে পোষাকসহ জুতা সেন্ডেল ও কসমেটিকস এর বেচা কেনা। রবিবার(২৩-০৩-২০২৫) উপজেলার বাঘা পৌর সদরের পোশাক বাজার ও ফ্যাশন হাউজগুলো ঘুরে দেখা গেছে,মার্কেটে নারি ক্রেতার সংখ্যা বেশি।
খন্দকার শপিং কমপ্লেক্সের ‘মা ফ্যাসন’ এর স্বত্তাধিকারি আলমগীর হোসেন ও সাত্তার প্লাজার ডায়মন্ড কালেকশনের স্বত্তাধিকারি সুজিত কুমার সরকারসহ অভিজাত বস্ত্র বিতানের মালিকরা জানান, রমজানের আগে দোকান ঘষামাজা করে ঈদে ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে শিশু থেকে সব বয়সী মানুষের বিভিন্ন ডিজাইনের পোষাক তুলেছেন তারা। খদ্দের সামাল দিতে বাড়িয়েছেন কর্মচারির সংখ্যাও। এখন বেশিরভাগ মানুষ নিজের,স্ত্রীর ও বাচ্চাদের পোষাক কিনেছেন। এবার লেটে বেচা কেনা শুরু হয়েছে। শেষের দিকে আরো বাড়তে পারে বলে মন্তব্য তাদের। নিয়মিত কর্মচারি ছাড়াও অতিরিক্ত কর্মচারি বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ছেলের বউ ও দুই মেয়েকে নিয়ে সাত্তার প্লাজায়‘জমজম বস্ত্র বিতান-এ আসেন, ছাতারি গ্রামের শফিকুল ইসলাম। বাজেটের সাথে সমন্বয় রেখে দুই মেয়ের জন্য ১৪০০ টাকা দামের জরজেট পার্টি ড্রেস, ছেলের বউ এর জন্য ৭৫০ টাকা দিয়ে কিনেছেন থ্রিপিচ। নিজের ও স্ত্রীর জন্য পরে কেনবেন বলে জানান । ৫০০শ ও ২৫০শ টাকা দিয়ে ৫ বছর ও আড়াই বছর বয়সের ছেলে-মেয়ের জন্য পোষাক কিনে বাড়ি ফিরছিলেন রায়হান আলী।
গত বছর যেই দামে পোষাক কিনেছেন সেই ধরনের পোষাকের দাম কিছুটা বেড়েছে বলে ধারনা তাদের। ব্যবসায়ীদের দাবি, এবার সব ধরনের পোষাকের দাম বাড়েনি। তার পরেও মার্কেটে ক্রেতা কম। কারণ হিসেবে জানান,আগের তুলনায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেশি হয়েছে। অনেকে অনলাইনেও কেনা কাটা করছেন। অন্যদিকে মানুষের আয় রোজগারও কম।

ব্যবসায়ীরা জানান, এবার ঈদ সামনে রেখে বর্তমান বেচা কেনার ধরন অনুযায়ী ইন্ডিয়ান, চাইনা পোষাকের পাশাপাশি পাকিস্থানী পোষাকের চাহিদা বেশি। এর মধ্যে ৩ (তিন) হাজার থেকে ৪(চার) হাজার টাকা দামের তানা পানা,দেড় হাজার থেকে ৩(তিন) হাজার টাকা দামের শীল কাতান, দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা দামের কান্তি বরন,৪(চার) হাজার থেকে ৬(ছয়) হাজার টাকা দামের পাখী,২(দই) হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা দামের ডিজিটাল প্রিন্ট শাড়ী, পাকিস্থানী থ্রিপিচ-কর্টন,কোর পিন, ওড়না,হিজাব,কোয়ালিটি ভেদে বাচ্চাদের পায়জামা,জামা ওড়না, গাবারা, সাবারা, পার্টি ড্রেস (জরজেট) সুতির ফ্লগ, গ্রাউন, ছেলেদের টি শার্ট, কারকো প্যান্ট,জামাই প্যান্ট, জিন্স প্যান্ট,ইন্ডিয়ান মেগনেট ফুল হাতা শার্ট এর বিক্রি বেড়েছে। মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন ৫০০ থেকে ১২০০শ টাকা দামের গ্রাউন,সুতির ফ্লগ,৮০০ থেকে ২০০০ টাকা দামের পার্টি ড্রেস, দেড় হাজার থেকে ৩০০০ টাকা দামের জামা,পায়জামা,ওড়না বেশি কিনছেন।

উপজেলার বড় ব্যবসায়ী নুর প্লাজার রুপায়ন বস্ত্রালয় এন্ড গার্মেন্টস’র স্বত্তাধিকারি কামরুল হাসান, প্রজাপতি ফ্যশান এর স্বত্তাধিকারি সুবদেব সরকার সহ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, শিশু থেকে সব সব বয়সের ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে দেশী কাপড়ের পাশাপাশি ইন্ডিয়ান,পাকিস্থান,চায়নাসহ শতাধিক ব্যান্ডের নানান দামের বাহারি নামের পোষাক তুলেছেন। ৫০০ টাকা থেকে ৬ (ছয়) হাজার দামের গাবারা,সাবারা,২৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা দামের কাতান শাড়ি,৩৫০০শ থেকে ১২ হাজার টাকার লেহাংগা থ্রিপিচ,৩০০০ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা দামের টিসু কাতান,৩৫০০ টাকার চন্দ্রি গ্রাউন, ছোটদের ১০০০ হাজার থেকে ১৬০০ টাকা দামের রানি ফ্লগ, ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা দামের সুতি ফ্লগ,৭০০ থেকে ২০০০ টাকা দামের লেহেংগা, বড়দের ১৫০০ থেকে ৪৫০০ দামের চায়না গেঞ্জি-টিশার্ট, ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দামের ফুলহাতা রিচ কালেকশন শার্ট,২০০০ থেকে-৩৫০০ টাকার ফুলহাতা শার্ট,১৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা দামের সুলতানি পাঞ্জাবি, ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা দামের কাবলি সেট, শেখশাদি পাঞ্জাবি রয়েছে।

বাঘ পৌর সদরে মাজেদা প্লাজার রুপম ফাশান এন্ড গার্মেন্টস,লেডিস কর্নার এন্ড ফ্যাশন গ্যালারীর স্বত্তাধিকারি আজমুল কামাল, গ্যালারী এন্ড বেবী ক্লাব-আসলাম হোসেন জানান,প্রতিযোগিতার যুগে কোন খদ্দের ফেরত না যায়,সেজন্য সব ধরনের পোষাক সহ কর্মচারির সংখ্যাও বাড়িয়েছেন। খরচের হিসেবে বেচা কেনা ভালো না হলে টিকে থাকা মুশকিল হবে।

রুপায়ন বস্ত্রালয় এন্ড গার্মেন্টস’র স্বত্তাধিকারি কামরুল হাসান বলেন, রমজান শুরুর ২/১ মাস আগে থেকেই বিভিন্ন ডিজাইনের পোষাক তুলেছেন। বিগত বছরগুলোয় রমজানের শুরু থেকে ঈদের কেনাকাটা চলেছে। বর্তমানে বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের পোষাক বেশি বিক্রি হচ্ছে।
পোষাক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহিন আলম বলেন, মার্কেটে অনেক দোকান। ছোট বড় পুরুষ-মহিলাদের সুতি, তাঁতসহ নানা ধরনের বাহারি ডিজাইনের পোষাক আমদানি করা হয়েছে। কর্মহীন মানুষগুলোকে আগে ডাল-ভাতের জন্য যুদ্ধ করতে হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় এসব মানুষ কিভাবে কেনাকাটা করবে,তা নিয়েও দুঃচিন্তা রয়েছে।

কসমেটিক্স ব্যবসায়ী রায়হান ও ফ্যাশন সুজ এর আবুল হোসেন জানান, পোষাকের সাথে মানানসই জুতা-সেন্ডেল ও কসমেটিক্স কেনার বিষয়টি মাথায় রেখে ক্রেতাদের ভিড় থাকে। তুলনামূলক দাম না বাড়লেও এবার তাদের বেচা কেনা বাড়েনি।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *